জীনতত্ত্ব (Genetics)

জীনতত্ত্ব (Genetics)

জীনতত্ত্ব হলো জীবের বংশগতির এবং জিনের আচরণ নিয়ে গবেষণা। এটি জীবের বৈশিষ্ট্যগুলি এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে কীভাবে স্থানান্তরিত হয় তা বিশ্লেষণ করে। জীবদেহের প্রতিটি কোষে ডিএনএ থাকে, যা সমস্ত জীবনের বৈশিষ্ট্যগুলি নিয়ন্ত্রণ করে। ডিএনএর ক্ষুদ্র অংশকে জিন বলা হয়, এবং এই জিনের মাধ্যমেই বংশগত বৈশিষ্ট্যগুলি সন্তানের মধ্যে প্রেরিত হয়।

জীনতত্ত্বের ইতিহাস ও মেন্ডেলের সূত্র: জীনতত্ত্বের সূচনা হয়েছিল গ্রেগর মেন্ডেলের কাজের মাধ্যমে, যিনি ১৮৬০-এর দশকে মটরগাছের ওপর গবেষণা করেন। মেন্ডেলের সূত্রগুলো বংশগতি এবং জিনের কার্যকলাপের মূল ধারণা প্রদান করে। তাঁর দুটি প্রধান সূত্র হলো:

  1. উত্তরাধিকার সূত্র (Law of Segregation): একক জিনের দুটি অ্যালিল (gene variant) আছে, এবং প্রত্যেকটি বংশধরের মধ্যে একটি করে স্থানান্তরিত হয়।
  2. স্বাধীন বণ্টনের সূত্র (Law of Independent Assortment): ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জিনগুলো একে অপরের প্রভাবমুক্ত হয়ে বন্টিত হয়।

জীন ও ক্রোমোজোম: জিনগুলো ক্রোমোজোমের অংশ, যা ডিএনএ দিয়ে গঠিত। একক জীবদেহের সকল বৈশিষ্ট্য ডিএনএ-এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। জিনগুলো ডিএনএ-এর মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যের নির্দেশাবলী প্রদান করে। এসব নির্দেশাবলী অনুযায়ী প্রোটিন তৈরি হয়, যা জীবের গঠন এবং কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে।

জীনতত্ত্বের প্রয়োগ: জীনতত্ত্বের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি কিভাবে:

  • জিনের মাধ্যমে বৈশিষ্ট্য উত্তরাধিকারসূত্রে আসে।
  • বংশগত রোগ যেমন হিমোফিলিয়া, সিস্টিক ফাইব্রোসিস ইত্যাদি রোগ কেন এবং কিভাবে সৃষ্টি হয়।
  • জিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

জীনতত্ত্বের এই গবেষণাগুলো আধুনিক জীববিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *