মাইটোকন্ড্রিয়া (Mitochondria)

মাইটোকন্ড্রিয়া (Mitochondria)

মাইটোকন্ড্রিয়া হলো ইউক্যারিওটিক কোষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গাণু, যা কোষের “পাওয়ারহাউজ” নামে পরিচিত। কারণ এটি কোষের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে। শক্তি উৎপাদনের এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় কোষীয় শ্বসন (Cellular respiration), যার মাধ্যমে খাদ্য উপাদান বিশেষ করে গ্লুকোজ ভেঙে এডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) তৈরি হয়। এডিনোসিন ট্রাইফসফেট বা ATP হলো সেই উচ্চশক্তিসম্পন্ন যৌগ, যা কোষের সব ধরনের কার্যকলাপে প্রয়োজন হয়।

মাইটোকন্ড্রিয়ার গঠন:

  • মাইটোকন্ড্রিয়া দ্বৈত ঝিল্লি দ্বারা বেষ্টিত। বাহ্যিক ঝিল্লি মসৃণ এবং অভ্যন্তরীণ ঝিল্লি নানা ভাঁজযুক্ত, যাকে ক্রিস্টি (Cristae) বলা হয়। ক্রিস্টি ভাঁজগুলোর ফলে মাইটোকন্ড্রিয়ার ভেতরের পৃষ্ঠের এলাকা বৃদ্ধি পায়, যা কোষীয় শ্বসনের সময় ATP উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • মাইটোকন্ড্রিয়ার ভেতরের অংশে তরল পদার্থ থাকে, যা ম্যাট্রিক্স (Matrix) নামে পরিচিত। এখানে মাইটোকন্ড্রিয়ার নিজস্ব ডিএনএ, রাইবোজোম, এবং কিছু এনজাইম থাকে। মাইটোকন্ড্রিয়ার নিজস্ব ডিএনএ থাকার কারণে এটি নিজের প্রজনন করতে পারে এবং প্রোটিন সংশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়।

মাইটোকন্ড্রিয়ার প্রধান কার্যাবলী:

  1. শক্তি উৎপাদন: মাইটোকন্ড্রিয়া গ্লুকোজের মতো খাদ্য উপাদান থেকে শ্বসনের মাধ্যমে ATP উৎপাদন করে, যা শক্তির প্রধান উৎস।
  2. কোষীয় মেটাবোলিজম নিয়ন্ত্রণ: মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষের কার্যকলাপের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
  3. অ্যাপোপটোসিস: কোষের স্বাভাবিক মৃত্যুর প্রক্রিয়া (Apoptosis) মাইটোকন্ড্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি কোষের বৃদ্ধির নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

মাইটোকন্ড্রিয়ার ভূমিকা কোষের কাজের ক্ষেত্রে অপরিহার্য। এটি না থাকলে কোষ শক্তির অভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *